আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সামনে যে সংকট উপস্থিত হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে সামরিক অভিযানের বদলে কিয়েভের সঙ্গে সংলাপকে মস্কোর অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছে বেইজিং। দেশটির অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক ঝ্যাং জুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের ইমার্জেন্সি সেশনে দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘের চীনা প্রতিনিধি ঝ্যাং জুন বলেন, ‘এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, উভয়পক্ষকে কূটনৈতিক আলোচনায় জোর দেওয়া এবং যেসব সংকট দুই দেশের মধ্যে রয়েছে—রাজনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে তার সমাধান করা।’
‘রাশিয়া ও ইউক্রেন সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার জটিলতাগুলো সমাধান করুক— তা চীন সবসময়ই চায় এবং সমর্থন করে।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন এবং এই ব্যাপারটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।
এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
চীন অবশ্য শুরু থেকেই সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছিল এবং বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল— শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান সম্ভব।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য ইতোমধ্যে সংলাপ শুরু করেছেন। সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র বেলারুশের উদ্যোগে দেশটির ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর গোমেলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফা বৈঠক হয় দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে।
বৈঠক শেষে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বুধবার দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বসার কথা আছে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের।
সূত্র: আরটি